দেশের ১১ কোটি নাগরিকের তথ্য বিক্রিতে ২০ কোটি টাকার লেনদেনের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা

নির্বাচন কমিশনের ডেটা সেন্টারে সংরক্ষিত বাংলাদেশি ১১ কোটির বেশি নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির ঘটনায় ২০ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। 

বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান বলেন, নাগরিকদের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়ের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে অনেক সংস্থা জড়িত। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলেরও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

তথ্য চুরির ঘটনায় মামলার এজাহারনামীয় আসামি ডেটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এ কাজের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।

তালেবুর বলেন, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেসের কাছে কম্পিউটার কাউন্সিল যে তথ্য বিক্রি বা হস্তান্তর করেছে, তা কোন আইনে কীসের মাধ্যমে, কী স্বার্থে করেছে – উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

তালেবুর বলেন, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি যাচাই নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুসারে কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো অবস্থাতেই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না। তা লঙ্ঘন করে কম্পিউটার কাউন্সিল ডিজিকনের সহায়তায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য বিক্রি করেছে। এতে কারা কীভাবে লাভবান হয়েছে– খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য নাগরিকদের ৪৬ ধরনের তথ্য নেওয়া হয়। 

দেশের ১১ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির এ ঘটনায় ঢাকার কাফরুল থানায় সাইবার আইনে একটি মামলা হয়েছে। তাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর বাইরে আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।