অনেকে মনে করেন, কোনো কাজের শুরুতে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলার অভ্যাস শুধুই নবীজীর সুন্নাহর অনুসরণ। মূলত, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলার শিক্ষা দিয়েছিলেন।
ইনশাআল্লাহ বলে কোনো কাজ শুরু করার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ওপর সম্পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রাখা হয়। ইনশাআল্লাহ বলে শুরু করা কাজটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্বয়ং বান্দার জন্য সহজ করে দেন।
প্রতিটি মুমিনের উচিত অন্তরে ও প্রকাশ্য স্বীকারোক্তির মাধ্যমে আল্লাহর উপর ভরসা করা। ভবিষ্যতে কোন কাজ করার কথা বললে এভাবে বলা দরকার, যদি আল্লাহ চান, তবে আমি এ কাজটি আগামীকাল করব। ইনশাআল্লাহ বাক্যের অর্থ তাই।
ভবিষ্যতকালে কোনো কাজ করার ওয়াদা বা স্বীকারোক্তি করলে এখন থেকে এর সাথে ‘ইনশাআল্লাহ’ বাক্যটি আমরা অবশ্যই যুক্ত করবো, ইনশাআল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ বলার বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা নিজেই শিক্ষা দিয়েছেন রাসূল সা.-কে। এ ক্ষেত্রে একটি ঘটনা প্রসিদ্ধ রয়েছে। একবার ইহুদিরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনটি কথা জিজ্ঞাসা করেছিল। আত্মার স্বরূপ কি এবং গুহার অধিবাসী ও যুল-কারনাইন কে ছিল?
তাদের জিজ্ঞাসার জবাবে নবীজি সা. বললেন, আমি তোমাদেরকে আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু এর পর ১৫ দিন পর্যন্ত জিবরীল আ. ওহী নিয়ে এলেন না। অতঃপর যখন এলেন, তখন মহান আল্লাহ ‘ইন শা-আল্লাহ’ বলার নির্দেশ দিলেন।
অর্থাৎ, অদূর ভবিষ্যতে বা দূর ভবিষ্যতে কোনো কাজ করার সংকল্প করলে, ‘ইন শা-আল্লাহ’ অবশ্যই বলে নিও। কেননা, মানুষ তো জানেই না যে, যা করার সে সংকল্প করে, তা করার তাওফীক সে আল্লাহর ইচ্ছা থেকে পাবে, না পাবে না?
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে –
وَ لَا تَقُوۡلَنَّ لِشَایۡءٍ اِنِّیۡ فَاعِلٌ ذٰلِكَ غَدًا ﴿ۙ۲۳اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰهُ ۫ وَ اذۡكُرۡ رَّبَّكَ اِذَا نَسِیۡتَ وَ قُلۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّهۡدِیَنِ رَبِّیۡ لِاَقۡرَبَ مِنۡ هٰذَا رَشَدًا ﴿۲۴
আর কোন কিছুর ব্যাপারে তুমি মোটেই বলবে না যে, ‘নিশ্চয় আমি তা আগামী কাল করব’ ‘আল্লাহ ইচ্ছে করলে’ বলা ছাড়া। যদি ভুলে যাও (তবে মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে) তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর আর বল, ‘আশা করি আমার প্রতিপালক আমাকে এর চেয়েও সত্যের নিকটবর্তী পথে পরিচালিত করবেন। (কেননা এক ব্যক্তি যেভাবেই সঠিক পথে চলুক না কেন, তার চেয়েও উত্তমভাবে পথ চলা যেতে পারে)। (সূরা কাহাফ, আয়াত : ২৩-২৪)