দুর্গাপূজা চলাকালীন নিরাপত্তায় থাকবে আনসার-ভিডিপির ২ লাখ সদস্য 

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সারা দেশে ৩২ হাজারের বেশি মণ্ডপে ২ লক্ষাধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। 

আজ (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের আনসার সদর দপ্তরে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাহিনীটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান,  পূজার মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগেই বিশেষ বিবেচনায় ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ (অধিক ঝুঁকিপূর্ণ)’ ও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ (ঝুঁকিপূর্ণ) মণ্ডপের মধ্য থেকে মোট ১৫ হাজার ৩২টি পূজামণ্ডপে আগামিকাল (রবিবার) থেকে দুই দিন, ৫৩ হাজার ১৪৮ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। প্রথমবারের মতো মোতায়েনকৃত সদস্যরা প্রাপ্য ভাতা পূজা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝে পাবেন, বাহিনিটির সদস্যদের উৎসাহ ও মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, যেকোনো আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৬৪ জেলায় ব্যাটালিয়ন আনসারের ৯২টি টিম মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে; প্রতি টিমে ৬ জন করে সদস্য থাকবে। এসব স্ট্রাইকিং টিম রোববার থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৮ দিন নিয়মিত নিরাপত্তা টহলের মাধ্যমে সব পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা সমন্বয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আনসার মহাপরিচালক আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তর থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য, আনসার ও ভিডিপি সদস্য-সদস্যাদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশের সব বিভাগ/জেলা/উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি এবং সর্বস্তরের নাগরিক কমিটির সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সম্পন্ন হয়েছে। সব নিরাপত্তা সংস্থার মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ মণ্ডপে ৮ জন এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মণ্ডপে ৬ জন ও ‘সাধারণ’ মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। 

এ সময় তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি থাকতে হবে। কিন্তু আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, সব মণ্ডপে আয়োজকরা সে ব্যবস্থা করেননি। যেসব মণ্ডপে সিসিটিভির ব্যবস্থা নেই, সেসব স্থানে আমাদের আনসার সদস্যরা আরও নিবেদিত থাকবে, যাতে কেউ যেন সুযোগ নিয়ে উৎসবকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে। এবার আনসার সদস্যদের পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় আনসারের মোবাইল স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। কোনো জায়গায় অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পেলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে মোকাবিলা করতে পারে।

আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৪ এ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী মোট ৩২ হাজার ৬৬৬টি পূজামণ্ডপে ২ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যা মোতায়েন থাকবে। তারা ১৩ অক্টোবর পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি সেবা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। 

আনসার মহাপরিচালক বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের স্বার্থে বাহিনীর সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যতীত অন্যান্য ধর্মের সকল সদস্যের ছুটি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি দেশের সব নাগরিককে এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সময়োচিত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করার আহ্বান জানান। মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব সুষ্ঠুভাবে ও আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করা সম্ভব হবে।