লম্বা সফরে ভারত যাচ্ছেন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু

পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত সফরে যাচ্ছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। আজ (রোববার) তিনি ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। 

জানা গেছে, গত বছরের শেষ দিকে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন তিনি। খবর বিবিসির।

অর্থসঙ্কটে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্রটির ঋণখেলাপি হওয়ার আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ৬ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবরের ৫ দিনের এ লম্বা সফরে ভারতের কাছে ‘বেল আউট’ চাইতে পারেন মুইজ্জু। যদিও নয়াদিল্লি ও মালে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি যে মুইজ্জুর সফরকালে মালদ্বীপের জন্য ভারতের একটি আর্থিক প্যাকেজের বিষয় আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটি আলোচনায় থাকবে।

প্রসঙ্গত, ‘বেল আউট’ হচ্ছে ঋণের দায়ে বা মূলধন সংকটে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে কোনো দেশ বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে আর্থিক সহায়তা করা।

২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের প্রচারে মালদ্বীপের ওপর নয়াদিল্লির প্রভাব কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন মুইজ্জু। তার নির্বাচনী প্রচারের কেন্দ্রে ছিল ‘ইন্ডিয়া আউট’ বা ‘ভারত হটাও’ নীতি। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলে আসছিলো দুই দেশের মধ্যে। বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য,মালদ্বীপ যে তার বড় প্রতিবেশী দেশটিকে উপেক্ষা করতে পারে না, তার ইঙ্গিত দিচ্ছে মুইজ্জুর এই সফর।

মালদ্বীপের বিশ্লেষক ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রভাষক আজিম জহির বলেন, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ভারত সফর বিভিন্নভাবে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মালদ্বীপ তার প্রতিবেশী ভারতের ওপর কতটা নির্ভরশীল, এর প্রতিফলন মুইজ্জুর এই সফর। ভারতের ওপরে মালদ্বীপের যে নির্ভরতা, তা অন্য কোনো দেশ সহজে পূরণ করতে পারবে না।

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত প্রায় ১ হাজার ২০০টি প্রবালদ্বীপ নিয়ে গঠিত রাষ্ট্র মালদ্বীপের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার। খাদ্য, অবকাঠামো নির্মাণ ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিশাল প্রতিবেশী দেশ ভারতের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল দেশটি। গত মাসে মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অর্থ দিয়ে দেড় মাসের আমদানির খরচ মেটানো সম্ভব। গত মাসে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডি’স মালদ্বীপের ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমান কমিয়ে দেয়। সংস্থাটির ভাষ্য, মালদ্বীপের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাস্তবিক অর্থে বেড়েছে।