সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো: ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি – আল মুস্তাকিম

ইসলামের মূলনীতি:
ইসলামে গুজব বা ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে গুজব ছড়ানোর কুফল এবং সত্য যাচাই করার গুরুত্ব স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

কুরআনের নির্দেশনা

  1. তথ্য যাচাইয়ের নির্দেশ:
    আল্লাহ বলেন: “হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো, যেন অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে আঘাত না করো এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে না হয়।”
    (সূরা আল-হুজুরাত: ৬)
  2. মিথ্যা বলা থেকে সাবধান: “মিথ্যা আবিষ্কার করা এবং তা প্রচার করার চেয়ে বড় অন্যায় আর কিছু হতে পারে না।”
    (সূরা আন-নাহল: ১০৫)

হাদিসের বাণী

  1. গুজব ছড়ানোর কুফল:
    রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “এক ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তা যাচাই না করেই বলে দেয়।” (মুসলিম: ৫)*
  2. মিথ্যা ও বিভ্রান্তির শাস্তি:
    রাসূল (সা.) বলেন: “মিথ্যা ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়, আর মিথ্যাবাদী জাহান্নামের উপযুক্ত।” (বুখারি ও মুসলিম)

গুজব ছড়ানোর ক্ষতিকর দিক

  1. সামাজিক বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি:
    • গুজব মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং সমাজে অস্থিরতা ছড়ায়।
    • ইসলাম শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়।
  2. মানুষের সম্মানহানি:
    • গুজবের মাধ্যমে কারও ব্যক্তিগত বা সামাজিক মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি গীবত ও অপবাদ হিসেবে বিবেচিত।
  3. আল্লাহর অসন্তোষ:
    • ভিত্তিহীন খবর প্রচার আল্লাহর কাছে একটি ঘৃণিত কাজ।

ইসলামের সমাধান ও নির্দেশনা

  1. যাচাই করা:
    যেকোনো তথ্য পাওয়ার পর তা যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
  2. সতর্কতা অবলম্বন:
    গুজব বা বিতর্কিত তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  3. ইসলামের নির্দেশনা প্রচার:
    • মানুষকে সচেতন করতে কুরআন ও হাদিসের বাণী ছড়িয়ে দেওয়া।
  4. পরকালে জবাবদিহিতার কথা স্মরণ রাখা:
    আমাদের প্রত্যেক কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

উপসংহার:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো ইসলামে কঠোরভাবে নিন্দনীয়। গুজব থেকে বিরত থাকা ও সত্যিকারের তথ্য যাচাই করার অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের সত্য কথা বলার তাওফিক দিন এবং গুজব থেকে রক্ষা করুন। আমিন।